September 26, 2023, 5:37 am

পুঁজিপতিদের আগ্রাসী থাবায় ধর্ষিত শীতলক্ষ্যা নদী-মাইন সরকার

মাইন সরকার
  • আপডেট সময় Saturday, June 24, 2023
  • 248 দেখা হয়েছে

নদীর নাম শীতলক্ষ্যা। এই শীতলক্ষ্যা নদীকে নিয়ে কথা সাহিত্যিক হরিপদ দত্ত লিখেছেন” শীতলক্ষ্যা ” গল্পকার সোমেন চন্দের অনেক লেখায় এ নদীর পটভূমি ফুটে উঠেছে।শীতলক্ষ্যা নদী বাংলাদেশের উওর কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নরসিংদী গাজীপুর, ঢাকা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার একটি নদী।নদীটির দৈর্ঘ্য ১০৮ কিলোমিটার যা৬৭ মাইল।আর এই শীতলক্ষ্যা নদীর উৎপত্তি পুরাতন ব্রম্মপুত্র নদ থেকে,গাজীপুর জেলার টোক নামক স্হানে পুরাতন ব্রম্মপুত্র দুটি ধারায় বিভক্ত হয়ে একটি ধারা বানার নামে দখিন পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে লাকপুর নামক স্হানে শীতলক্ষ্যা নাম ধারন করে। শীতলক্ষ্যা কলাগাছিয়ার কাছে ধলেশ্বরী নদীতে মিলেছে।এই নদীর পানি একসময় ছিলো স্বচ্ছ এবং শীতলতার জন্য বিখ্যাত।

বর্তমানে দখল আর ভয়াবহ দূষনের কবলে পড়ে ঐতিহ্যবাহী শীতলক্ষ্যা ধীরে ধীরে বিলিন হয়ে যাচ্ছে তার মূল কারন এ নদীকে কেন্দ্র করে অনেক অনেক শিল্পকারখানা গড়ে ওঠেছে। আর এই বড় বড় শিল্পকারখানার দখল দূষনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের এই শীতলতম নদীটি।

এই নদীতে শৈশবে আমি সাঁতার কেটেছি,নদীতে তখনও প্রচুর মাছ পাওয়া যেতো,ছোটো মামা এই নদী থেকে ধরে আনতো অনেক ওজনের বড় বড় বোয়াল মাছ বরশি দিয়ে। আমার বাড়ি থেকে বেশি দূরে নয় এ নদী।এ নদীর পাড়ে আমার ভালো লাগার অনেক মুহূর্ত ছিলো, বিকেল হলেই যেয়ে বসতাম নদীর পাড়ে।
আর নদীর ওপারের মানুষেরা ছিলো একটু নিম্ন শ্রেণির।জেলে, মাঝি, কুমারদের বাস ছিলো নদীর ঐ পাড়ে।এখন আর এ নদীতে তেমন মাছ পাওয়া যায়না
জেলে মাঝিদের জীবনেও নেমে এসেছে কঠিন সময়।

ছোট বেলায় বুড়োদের কাছ থেকে গল্প শুনতাম এ নদী দিয়ে চারতলা স্টিমার যেতো,তখন মানুষের যাতায়াত ছিলো নদীমুখি।নদীর পাড়ে বড় বড় মেলা বসতো,মেলায় জিলেপি বিক্রি হতো আর বসতো জুয়ার আসর..

এখনও আমি নদীর কাছে গেলে মনে হয় এ নদী আমার
জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু যার ছায়াতলে আমি বেড়ে ওঠেছি,যার জল দেখে আমি সচকিত হয়ে ওঠতাম।বর্ষায় নদীর যৌবন আসতো আর জলে টইটুম্বুর মাছের লাফালাফি এখনও আমি দেখতে পাই।এখনও ভেসে ওঠে চোখে।
এখন আমার নদীর মন ভালো নেই,তাই নদী পাড়ের জেলে মাঝিরাও ভালো নেই।ভালো আছে শুধু কারখানার মালিক মহল পুঁজিপতিরা,বড় বড় কারখানার চিমনি গুলোই বলে দেয় নদী ভালো নেই।
পুঁজিপতি মানুষের আগ্রাসী থাবায় প্রতিদিন নদী দর্শিত হয়।আজ আর নদীর যৌবন নেই।বর্ষাকালেও পানি নেই নদীর। নদীর আয়তন কমে কোথাও কোথাও নদী খালে পরিনত হয়েছে।আবার কোথাও কোথাও নদী দখলে বেড়েছে কারখানার আয়তন।

মাইন সরকার (কবি ও কলাম লেখক)

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর