June 10, 2023, 10:12 pm

দেশে আটকে পড়া প্রবাসীরা ঝুঁকছেন গরুর খামারিত

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট সময় Saturday, May 6, 2023
  • 70 দেখা হয়েছে

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশে এসে আটকে পরে বেকার হয়ে যান নরসিংদীর প্রায় কয়েক শত প্রবাসী। পাসপোর্ট ও ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তারা আর তাদের কর্মস্থলের দেশে ফিরতে পারেননি। ফলে তারা বেকার হয়ে পড়েন। এই বেকারত্ব ঘুচাতে অনেকেই গড়ে তুলেছেন নিজ বাড়িতে গরুর খামার।

খামার থেকে উৎপাদিত দুধ বিক্রি করে কর্মসংস্থানের সৃস্টি করেছেন তারা। আর দুধ বিক্রি করে ভালো অর্থ উপার্জন করতে পেরে খুশি তারাা। পাশাপাশি গরু মোটাতাজাকরণের প্রকল্পও গ্রহণ করেছেন অনেকে। এসব খামারির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে প্রায় লাখো মানুষ। কিন্তু ভয়াবহ করোনার প্রাদুর্ভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় নরসিংদীর এই খামারিগুলো। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যখন ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন ঠিক সেই মুহূর্তে গরুর দানাদার খাবার ও ওষুধপত্রে দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশার মুখে পড়েছেন খামারের মালিকরা।

নরসিংদী সদর উপজেলার পাঁচদোনা ইউনিয়নের চরমাদধদী এলাকার খামারী মনির হোসেন মোল্লা জানান, করোনায় গরুর খামারগুলো অনেকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। করোনার পর এই ক্ষতি পুষাতে পুনরায় খামারিগুলো কাজ শুরু করে। শুরুর পর্যায়ে কিছুটা লাভ হলেও বর্তমানে পশু খাদ্য ও ওষুধপত্রের দাম বৃদ্ধির কারণে ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন খামারিরা।

তিনি আরও বলেন, দুধ ও মাংসের দাম আশাতিতভাবে বৃদ্ধি না পেলেও পশু খাদ্য ও উপকরণের মূল্য বৃদ্ধিতে খামারি বন্ধ করে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।

বিদেশ ফেরত পলাশ উপজেলার চরসিন্দুর ইউনিয়নের ইছাখালী গ্রামের রিপন শিকদার জানান, তিনি বেশ কয়েকটি দেশে চাকরি করেও ছুটিতে করোনার আগে দেশে আসেন। এ সময় ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আর যেতে পারেননি। তাই তিনি নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছেন একটি গরুর খামার। এখানে দুধ দেওয়ার গাভী, গরু মোটাতাজাকরণের জন্য প্রায় অর্ধ-শতাধিক দেশি-বিদেশি গরু পালন করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি ১০টি মহিষ পালন করছেন। তার খামারের উৎপাদিত দুধ বড় বড় পাইকাররা বাড়ি থেকে নিয়ে যান। খামারী থেকে প্রথমে লাভবান হলেও বর্তমানে পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে আগের মতো লাভ হচ্ছে না বলে জানান। দানাদার খাবারের পাশাপাশি নিজ জমিতে উৎপাদিত কাচা ঘাসও খাওয়াচ্ছেন তার খামারের পশুদের।

জিনারদী ইউনিয়নের বাড়ারচর গ্রামের আরেক খামারী সুজন পাঠান জানান, খামার করে এখন আর আগের মতো লাভ হচ্ছে না। কারণ আগে পশু খাদ্যের যে দাম ছিল এখন তার দাম দ্বিগুণ। অথচ সেই তুলনায় দুধের দাম ও পশুর দাম বাড়েনি। তাই পশু খাদ্যের দাম কমানোর জন্য সরকারের দৃস্টি কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে নরসিংদী জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. হাবিবুর রহমান জানান, নরসিংদীতে তালিকাভুক্ত খামারি রয়েছে প্রায় এক হাজার ৭০৭ এবং সর্বমোট প্রায় দুই হাজারের মতো দুগ্ধ খামার রয়েছে। এই খামারি থেকে দৈনিক ১ দশমিক ৯২ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদিত হয়, যা নরসিংদীর চাহিদা মিটিয়ে ঢাকায় সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এসব খামারিগুলো করোনায় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এখন তারা পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছে। তাদের দেখাশোনার জন্য প্রাণী সম্পদ বিভাগের লোকজন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে।

এ ছাড়াও পশু খাদ্যের দাম বৃদ্ধির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এখন পশু খাদ্যের দাম বেশী। তাই গরুকে কাচা ঘাস খাওয়ানোসহ নিজস্ব পদ্ধতিতে উৎপাদিত খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।

সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর