নরসিংদী প্রতিনিধি:-নরসিংদী জেলার কৃষকরা সরিষা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। জেলার ৬টি উপজেলায় গ্রাম এলাকায় বর্তমানে হলুদের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেইদিকে সবুজের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় নরসিংদীতে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। আবহাওয়া অনুকুল থাকলে এবার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
নরসিংদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুকেছেন। সরিষার তোলার পর একই জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে।
সরিষা বেলে, দো-আঁশ মাটিতে ভালো হয়। সরিষা চাষে প্রচুর রোদ, কম তাপমাত্রা ও জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা প্রয়োজন। তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ও মাটিতে রসের অভাব হলে বীজের আকার ছোট হয় ও বীজে তেলের পরিমাণ কমে যায়। এজন্য বাংলাদেশে রবি মৌসুমেই সরিষার চাষ করা হয়ে থাকে।
নরসিংদী কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় ৮ হাজার ৭৮৪ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় ৩০০ হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে নরসিংদী জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৪৮৪ হেক্টর জমিতে। এবছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে জেলায় সরিষার চাষ করা হয়।
নরসিংদী জেলার সব উপজেলায় কমবেশী সরিষা উৎপাদন হয়। তবে জেলার নরসিংদী সদর ও রায়পুরা এই দুই উপজেলায় অন্য চারটি উপজেলার চেয়ে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী জমিতে সরিষা উৎপাদন হয়।
উপজেলা ওয়ারী হিসেবে নরসিংদী সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৩০০ হেক্টর, পলাশে ২৯৫ হেক্টর, শিবপুরে ২৬৩ হেক্টর, মনোহরদীতে ৭৬৫ হেক্টর, বেলাবতে ৪২১ হেক্টর ও রায়পুরায় ৩ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের সমারোহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার ক্ষেত।
বেলাব উপজেলার কৃষক মামুন মিয়া জানান, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে কোন কোন ক্ষেতে সরিষার দানা বাধতে শুরু করেছে। আবার কোথাও ফুল ফুঠেছে।
সদর উপজেলার আলিপুরা গ্রামের সরিষা চাষি জামাল মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫ শত টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মন। প্রতিমণ সরিষার বাজার মূল্য ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ টাকা বিক্রি করা হয়।
রায়পুরা উপজেলার আদিয়াবাদ গ্রামের চাষি হযরত আলী বলেন, এবার প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে বারী ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি, ফলনও হয়েছে ভাল।
জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আজিজুর রহমান জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যেভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত ইতি বাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের আরও একটি সাফল্য। দেশি জাতের সরিষার ৬০ থেকে ৭০ দিনে এবং উচ্চ ফলন শীল জাতের সরিষা উঠতে সময় লাগে ৭৫ থেকে ৮০ দিন।
তিনি আরও বলেন, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানী নির্ভরতা কমে যাবে।
সাধারণ সম্পাদক : মাহবুব সৈয়দ
এডিটর : মামুন শাহ পিংকু l মোবাইল : 01312-747096
ডিজাইন : মো শফিকুল ইসলাম l যোগাযোগ :01935-922009