নরসিংদী জেলায় ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া ও কনকনে শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত কিছুদিন যাবৎ এখানে সূর্যের দেখা মেলেনি। রাতে বৃষ্টিরমতো শিশির টপটপ করে পড়ে দুপুর পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকে। নরসিংদী সদর, পলাশ, শিবপুর, মনোহরদী, বেলাব ও রায়পুরা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় নিম্ন আয়ের লোকজন শীতের কাপড়ের অভাবে খরকুটো জ্বালিয়ে কোন রকমে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। দিন মজুর কৃষক- শ্রমিকেরা অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে কাজে যেতে পারছেনা। ফলে পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা। বিশেষ কোন কাজ ছাড়া লোক জন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। শীতের কারণে বিভিন্ন অফিস আদালতে লোক জনের উপস্থিতিও কম দেখা যাচ্ছে। হাসপাতালে সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ শীতজনির রোগ নিয়ে রোগী বেশী ভর্তি হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়েছে পুরো নরসিংদী জেলা। শীত থেকে রক্ষায় মোটা জামা-কাপড় পরে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কর্মজীবীরা। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চলাচল করতে দেখা গেছে এসময়।
নরসিংদী শহরের আরশিনগর সিএনজি স্টেশনের সিএনজি চালক সবুজ মিয়া বলেন, শুক্রবার থেকে একটু বেশি শীত আর কুয়াশা পড়ছে। এই শীতের মধ্যে গাড়ি নিয়ে বের হতে কষ্টও হচ্ছে। কিন্তু গরম বা শীত যেকোনো পরিস্থিতিতেই আমাদেরকে গাড়ি চালাতেই হবে জীবনের তাগিদে। যেখানে সময় পায় সে সিএনজি স্ট্যানে গিয়েই আমরা কয়েকজন মিলে কিছু কাঠ যোগার করে আগুন ধরিয়ে একটু গরম নেই। এমন করেই দিনকাটছে আমাদের প্রতিদিন।
শাষপুর এলাকার কৃষক বজলু বলেন, জমিতে গিয়ে চাষ বাস না করলে তো আর আমাদের পেটে ভাত জুটবেনা। তাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য এই শীতটা একটু কষ্টকরই হয়। সবাইতো আর আমরা মোটা জামা-কাপড় কিনতে পারি না।
এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে ভিড় বাড়ছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে শীতবস্ত্রের পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা। তবে তুলনামূলকভাবে বিপণিবিতানগুলোর চেয়ে ফুটপাতের দোকানগুলোতে অনেক ভীড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। যতই শীতের তীব্রতা বাড়ছে ফুটপাতের দোকানগুলোর বিক্রিও তত বাড়ছে।
ভোরের দিকে ঘন কুয়াশার সাথে সাথে হিমেল হওয়া যেন শীতের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করে, কুয়াশা ও শিশির কণা শীতকে আরো স্থায়ী করে রাখছে। শীত বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
এতে করে তারা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। অন্যদিকে গৃহপালিত পশু লালন পালনেও সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এ তীব্র শীত। ফলে পশু হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে শীতজনিত আক্রান্ত পশুর সংখ্যা