পলাশ(নরসিংদী)প্রতিনিধি:
প্রতি বছর ঈদের আগে নরসিংদী পলাশ উপজেলা ও ঘোড়াশাল পৌরসভায় হত দরিদ্রদের মাঝে নতুন জামা-কাপড় ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করতেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা।
জানা যায়,প্রতি বছর পৌরঃ মেয়র, চেয়ারম্যান,কমিশনার ও স্থানীয় নেতারা নিজস্ব উদ্যোগে নগদ টাকা, শাড়ি, থ্রি-পিস, লুঙ্গি ও ঈদের বাজারসহ নানা ধরনের সহায়তা করতেন। কেউ ব্যক্তিগতভাবে, কেউ দলীয় তহবিল থেকে আবার কেউ প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে এসব আয়োজন করতেন। কিন্তু এবারের ঈদে সেই চিত্র বদলে গেছে।
উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠী বলছেন, আগের মতো এবার ঈদে কোনো সহায়তা পাননি তারা। প্রতি বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা হত-দরিদ্রদের তালিকা করে তাদের জন্য নতুন জামা-কাপড় ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ করতেন। অনেকেই ঈদের দিন ভালো খাবার খেতে পারেন না বলে চাল, ডাল, তেল, চিনি, সেমাই, দুধসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দেওয়া হতো নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে । কিন্তু এবার সেসব কোনো উদ্যোগই দেখা যায়নি কারোরই মাঝে।
ঘোড়াশাল পৌর এলাকার চরপাড়া গ্রামের রিকশাচালক আব্দুল জব্বার বলেন, গত বছর আমার দুই ছেলে-মেয়ের জন্য নতুন জামা পেয়েছিলাম, ঘরের জন্য ঈদ বাজারও পেয়েছিলাম। এবার কেউ কিছু দিলো না। এমন ঈদ আগে কখনো কাটাইনি।
ডাঙ্গা ইউনিয়নের দিনমজুর শরিফ মিয়া বলেন, আগে চেয়ারম্যান সাহেবরা ঈদের আগে চাল-ডাল দিতেন, পাঁচশ-এক হাজার টাকা হাতে তুলে দিতেন। এবার কেউ-ই কিছুই দিলো না। ঈদের বাজার করবো কিভাবে।
জানা যায়,সরকার পরিবর্তনের পর থেকে – চেয়ারম্যান -কমিশনার মেম্বার সহ আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা রাজনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন আবার কেউ পালিয়েছেন। কেউ কেউ আত্মগোপনে থাকায় আগের মতো সামাজিক ও মানবিক কার্যক্রমেও তারা অংশ নিচ্ছেন না। ফলে দলীয় তহবিল থেকেও এবার কোনো সাহায্য দেওয়া হয়নি। অন্যদিকে, বিএনপি-জামায়াতের রাজনৈতিক অবস্থান বর্তমানে ভালো থাকলেও তারা দরিদ্রদের পাশে তেমন ভাবে দাঁড়াতে দেখা যায়নি। যদিও তারা বিভিন্ন সময় ফেশিস্ট আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের প্রতি অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন, তবে নিজেরা ক্ষমতায় আসার সুযোগ তৈরি হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো মানবিক উদ্যোগ নেয়নি ক্ষমতাসিন দেলর কেউই।
সাধারণ মানুষ আশা করছেন, ভবিষ্যতে যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, দরিদ্রদের প্রতি রাজনৈতিক নেতাদের মানবিক উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। উৎসবের সময় এসব সহায়তাই তাদের জন্য সবচেয়ে বড় আশার আলো।